ইউরোপ ডেস্কঃ ফ্রান্স থেকে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছেন, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো ফ্রান্সেও করোনাভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তাই সংক্রমণের বিস্তার রোধে ফ্রান্স সরকার দেশে পুনরায় লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার থেকে রাজধানী প্যারিসসহ ১৬ টি অঞ্চলেএই লকডাউন কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থাটি। অঞ্চলগুলি মূলত উত্তর ফ্রান্স এবং রাজধানী প্যারিস ও তৎসংলগ্ন এলাকা সমূহ। এই সমস্ত অঞ্চলে সমূহে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ই মার্চ সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্স জানান,বর্তমানে আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গের প্রাদুর্ভাব চলছে। তিনি জানান, বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের অধিকাংশই অর্থাৎ শতকরা ৭৫% শতাংশই বৃটেনের মিউটেশন ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত। ফ্রান্সের হাসপাতাল ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ সমূহে রোগীর পরিমান ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে প্রচন্ড চাপের মধ্যে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্স আরও জানান, রাজধানী প্যারিসে এখন প্রতি এক লাখ জনপদে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ শতের উপরে। করোনা মহামারীর এই তৃতীয় প্রাদুর্ভাব আরও ভয়াবহতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই আমাদের এর বিস্তার রোধ করতে জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুন : ইউরোপে করোনার তৃতীয় ঢেউ, বিভিন্ন দেশে আবারও লকডাউন
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে নতুন করে ৩৫ হাজার মানুষের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা দ্বিতীয় ঢেউ চলার সময় সর্বোচ্চ ছিলো। কাজেই ভাইরাসটির নতুন করে এই সংক্রমণের বিস্তার রোধ কমিয়ে আনার জন্য আমাদের পুনরায় কমপক্ষে ১ মাসের জন্য আবারও একটি কঠোর লকডাউনে যেতে হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি আরও জানান, নতুন এই লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী, সেলুন, কাপড়ের দোকান এবং আসবাবপত্রের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও বইয়ের দোকান খোলা রাখা যাবে এবং স্কুলও খোলা থাকবে। তাছাড়াও নিজ বাড়ি থেকে মুক্ত বাতাস বা কেনাকাটার জন্য ১০ কিলোমিটারের বেশী দূরে যাওয়া যাবে না। ঘর থেকে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞা সন্ধ্যা ৬ টার পরিবর্তে আপাতত ৭ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত করা হয়েছে। কেননা আগামী ২৮ শে মার্চ পুনরায় গ্রীষ্মের সময়ের পরিবর্তন আসছে। নতুন এই লকডাউনে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট ব্যতীত এক অঞ্চলের লোক অন্য অঞ্চলে যেতে পারবে না।
বর্তমানে ফ্রান্সের দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৩৫,০০০ হাজারের উপরে। ফ্রান্সে এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১,৮১,৬০৭ জন এবং এই পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ৯১,৬৭৯ জন।
সূত্র :কবির আহমেদ /ইবি টাইমস
আরও পড়ুন : অস্ট্রিয়ায় করোনার নতুন হটস্পট স্কুল ১,০১৫ শিশু করোনায় আক্রান্ত